খুলনায় শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

708

Khulna-pic-02-(17-Sep,2017)
শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা থেকে: শীত আসতে এখনও অনেক বাকি। সবজি আবাদের রবি মৌসুম শুরু হতেও এখনও পুরোপুরি এক মাস। কিন্তু এরই মধ্যে খুলনা জেলার নয় উপজেলায় আগাম শীতকালীন সবজির চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। প্রতি বছর আগাম উৎপাদিত সবজি বাজারে তুলে বিক্রয়ে ভালো দাম পেয়ে থাকেন চাষিরা তাই আগাম সবজি আবাদে আগ্রহী তারা। জেলার নয় উপজেলার কৃষকরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিনে জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, খর্ণিয়া, ভদ্রদিয়া, বরাতিয়া, নরনিয়া, কাঁঠালতলাসহ বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা ব্যস্ত শীতকালীন সবজি চাষে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় শীতকালীন সবজি চাষ লাভবান হওয়ায় কৃষকেরা এদিকেই ঝুঁকে পড়েছেন বলে জানান এলাকার কৃষকরা।
শীতের শুরুতেই বাজারে বিক্রি করে বেশি টাকা আয়ের আশায় চাষিরা এখন জমিতে শীতকালীন শাকসবজির চারা বপন ও পরিচর্যার কাজ করছেন।

এ সমস্ত এলাকায় এবার যেসব শাক সবজি চাষ হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে আলু, মূলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, ঢেঁড়স, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক, লাউ অন্যতম। তবে ডুমুরিয়া উপজেলায় এ বছর ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ একটু বেশিই দেখা গেছে হয়েছে। সবজির মান ভালো হওয়ায় পইকারীর পাশাপাশি খুচরা বাজারেও নতুন সবজির চাহিদা বেশ ভালো থাকে, দামও বেশি পাওয়া যায়।

বরাতিয়া গ্রামের কৃষক মহিতোষ জানান, আগাম সবজি চাষ করে বেশি লাভবান হয়ে থাকি। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকার এসে উৎপাদিত এসব সবজি মাঠ থেকেই আমাদের কাছ থেকে ক্রয় করে নিয়ে যায়। তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে গিয়ে থাকেন।

সবজিচাষি সালাম মোড়ল জানান, অতিবৃষ্টির কারণে এবার সবজি আবাদ করতে একটু পিছিয়ে গেছি। পানিতে জমিটি ডুবে ছিল, পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে চাষ দিয়ে চারা রোপণের উপযোগী করেছেন। তারপর ফুলকপির বীজ কিনে তা রোপণ করার ২০-২২ দিন পর তুলে চারা রোপণ করছেন। তিনি ২ বিঘা জমিতে কপির চারা রোপণ করবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান, গত রবি মৌসুমে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমি। অর্জিত হয় ৬ হাজার ৫৬০ হেক্টর ( ১ হেক্টর=২.৪৭ একর) জমি। গত বছরের চাষকৃত জমি চলতি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ধরা হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম জানান, এ উপজেলায় ব্যাপক সবজির আবাদ হয়। সারা বছরের তিনটি মৌসুমে প্রায় ২০০ কোটি টাকার সবজির আবাদ হয়ে থাকে। খুলনার জেলা ৯ উপজেলায় যত জমিতে সবজির আবাদ হয়ে থাকে তার অর্ধেকের বেশি সবজির আবাদ হয় ডুমুরিয়াতে। এ উপজেলায় খরিপ-২ (অক্টোবর ১৬ থেকে মার্চ ১৫) পর্যন্ত শীতকালিন সবজির মৌসুম বলা হয়। এ মৌসুমে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৪০ হেক্টের জমি।

ফার্মসঅ্যান্ড ফার্মার২৪ডটকম/এম